বাইডেন আমেরিকার গণতন্ত্রকে ধ্বংস করার চেষ্টা করছে: ট্রাম্প

আন্তর্জাতিক

সুবর্ণবাঙলা ডেস্ক

বাইডেন ট্রাম্প

রাষ্ট্রীয় নথি অব্যবস্থাপনার দায়ে অভিযুক্ত যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ট ট্রাম্প (৭৭) তার বর্তমান পরিস্থিতির জন্য বাইডেনকে দায়ী করেছেন।

বুধবার সমর্থকদের সামনে দেওয়া এক বক্তব্যে এমন অভিযোগ করেন তিনি। পাশাপাশি যুক্তরাষ্ট্রে বর্তমান সরকার ব্যবস্থাকে ‘দুর্নীতিগ্রস্ত’ বলেও উল্লেখ করেন ট্রাম্প। এর আগে মঙ্গলবার অভিযোগের শুনানিতে মিয়ামির ফেডারেল আদালতে তার বিরুদ্ধে আনা সব অভিযোগ অস্বীকার করেন তিনি। খবর গার্ডিয়ানের।

শুনানির পর ‘ট্রাম্প ন্যাশনাল গলফ’ ক্লাবে সমর্থকরদের ভিড়ে বাইডেনকে উদ্দেশ করে ট্রাম্প আরও বলেন, ‘ইতিহাসে তাকে সবচেয়ে দুর্নীতিগ্রস্ত প্রেসিডেন্ট হিসেবেই স্মরণ করা হবে এমনটা নয় বরং তার দল মিলে আমেরিকার গণতন্ত্রকেও ধ্বংস করার চেষ্টা করছে।’ বক্তৃতায় তার বিরুদ্ধে ফৌজদারি মামলা করা যুক্তরাষ্ট্রের বিচার ব্যবস্থাপনার পরামর্শদাতা জ্যাক স্মিথকে তিনি ‘মানসিক বিকারগগ্রস্ত’ ও ‘ঠকবাজ’ বলে উল্লেখ করেন। সেসময় উপস্থিত ট্রাম্প সমর্থকরা তাকে জন্মদিনের শুভেচ্ছা জানান।

বুধবার ৭৭ বছর বয়সে পা রাখলেন এ নেতা। মামলার অপর আসামি ট্রাম্পের সহকারী ওয়াল্ট নটাও আদালতে হাজির হয়েছিলেন। নটার পক্ষে স্থানীয় কোনো আইনজীবী না থাকায় আগামী ২৭ জুন পর্যন্ত অপরাধের অভিযোগের বিষয়ে স্বীকারোক্তি দিতে হবে না তাকে। আদালত মুচলেকা ছাড়াই ট্রাম্পের সহকারীকে আদালত ছাড়ার অনুমতি দেন। তাকেও অন্য সাক্ষীদের সঙ্গে কথা না বলার নির্দেশ দেওয়া হয়।

ট্রাম্পের বিরুদ্ধে আনা অভিযোগের মধ্যে ছিল প্রেসিডেন্ট পদের মেয়াদ শেষে হোয়াইট হাউজ ছাড়ার পর ট্রাম্প বিধিবহির্ভূতভাবে নিজের কাছে যেসব নথি রেখে দিয়েছিলেন সেগুলোর মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রের পারমাণবিক প্রকল্পের অত্যন্ত গোপনীয় কিছু নথিও ছিল। চলতি বছর এই নিয়ে দ্বিতীয়বারের মতো তিনি ফৌজদারি মামলায় অভিযুক্ত হয়েছেন।

যুক্তরাষ্ট্রের বিচার বিভাগের দায়ের করা এই ফৌজদারি মামলাটি আগামী বছর মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের প্রার্থী হওয়ার দৌড়ে নামা ট্রাম্পের জন্য আরেকটি আইনি ধাক্কা। তিনি ইতোমধ্যে নিউইয়র্কে আরেকটি ফৌজদারি মামলায় অভিযুক্ত হয়ে আছেন, যার বিচার আগামী মার্চে শুরু হওয়ার কথা।

পরবর্তী প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ফের রিপাবলিকান দলীয় প্রার্থী হওয়ার জন্য প্রচারণা শুরু করেছেন ট্রাম্প, কিন্তু দেশটির সাবেক প্রেসিডেন্টদের মধ্যে তিনিই প্রথম ফেডারেল ফৌজদারি অভিযোগের মুখোমুখি হচ্ছেন; তবে কোনো অন্যায় করেননি বলে দাবি করেছেন তিনি। ট্রাম্পের বিরুদ্ধে আনা অভিযোগগুলোর মধ্যে ষড়যন্ত্র, মিথ্যা বিবৃতি, বিচারে বাধা এবং গুপ্তচরবৃত্তি আইনের অধীনে অবৈধভাবে গোপনীয় নথি ধরে রাখা আছে বলে জানা গেছে।

এর আগে জর্জিয়ার অঙ্গরাজ্যের সরকারি কৌঁসুলিরা তদন্ত করে দেখছেন যে ট্রাম্প এবং তার সহযোগীরা ২০২০ সালের নির্বাচনে ওই রাজ্যে স্বল্প ভোটে তার পরাজয়ের ফলাফল তিনি অবৈধভাবে উলটে দেওয়ার চেষ্টা করেছিলেন কি-না।

এই অভিযোগে তার বিরুদ্ধে সরাসরি কোনো তদন্ত করা হচ্ছে কি-না তা জানা যায়নি, তবে চলতি গ্রীষ্ম মৌসুমের কোনো এক সময়ে এই অভিযোগনামা প্রকাশ করা হবে বলে মনে করা হচ্ছে।

মার্কিন বিচার দপ্তর ২০২১ সালের জানুয়ারি মাসে যুক্তরাষ্ট্রের সংসদ ভবন ক্যাপিটলে হামলা এবং নির্বাচনকে বাতিল করার প্রচেষ্টার অভিযোগে একটি ফৌজদারি তদন্ত চালাচ্ছে।

কিন্তু ওই প্রচেষ্টাটি চালানো হয় কঠোর গোপনীয়তার মধ্যে। এখন এটি খুঁজে বের করতে মার্কিন ইতিহাসে সবচেয়ে বড় পুলিশ তদন্ত চলছে। তবে ওই তদন্তে ট্রাম্প কতটা লক্ষ্যবস্তু তা জানা যায়নি।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *