সুবর্ণবাঙলা বিনোদন ডেস্ক
অ্যাক্সিডেন্ট, পরিবারের বারণ, ভাঙা মন, কোনও কিছুই আটকে রাখতে পারেনি তাঁকে।
তিনি সায়ন্তনী গুহঠাকুরতা। অভিনয়ই তাঁর ধ্যান, জ্ঞান। বাড়ির জন্য চালিয়ে যেতে হয়েছে পড়াশোনা। তাঁর প্রত্যাবর্তন হয়েছে রাজর্ষি দে’র ‘মায়া’য়। নতুন ছবি নিয়ে অকপট সায়ন্তনী গুহঠাকুরতা, সামনে অঙ্গনা ঘোষ।
‘মায়া’র লড়াই কতটা কঠিন ছিল?
সায়ন্তনী: রাজর্ষি দা’র (পরিচালক) সঙ্গে কাজের কথা হচ্ছিল অনেক দিন ধরেই। লকডাউনের সময় উনি ফোন করে জানান একটি চরিত্র আছে। গ্ল্যামারাস নয়। একটু নেগেটিভ শেড আছে। এর পরে আমি স্ক্রিপ্ট শুনতে যাই, কাজটা করতে রাজি হই। এভাবেই ‘মায়া’তে আমার আসা।
মাল্টিস্টারার ছবিতে ফোকাস আউট হওয়ার ভয় ছিল?
সায়ন্তনী: লকডাউন তখন। চারিদিকে খারাপ অবস্থা। কাজ আসলেও পারিশ্রমিকের সঙ্গে অ্যাডজাস্টমেন্টের চাপ। ঠিক তখনই ‘মায়া’তে কাজটা পাই। ডিজিটাল মিডিয়া থেকে রোজগার করা কোনও অভিনেত্রীর লক্ষ্য হতে পারে না। আমি তখন ছবিতে কাজ করার জন্য মুখিয়ে ছিলাম। আমি থিয়েটার করতাম। চিরকালই নিজের চরিত্র নিয়ে সাহসী থেকেছি। ‘জলে জঙ্গলে’ ছবিতে মিঠুন চক্রবর্তীর সঙ্গেও অভিনয়ের অভিজ্ঞতা আছে। ফোকাস আউট হওয়ার ভয় আমার কোনও দিনই ছিল না।
আগামী দিনে আর কোন রূপে দেখা যাবে সায়ন্তনীকে?
সায়ন্তনী: তিনটে প্রোজেক্টের কথা চলছে। এখনই কিছু বলতে পারবো না। হয়তো অগাস্টের পরে শুটিং শুরু হবে। এই বছর আমার তিনটে রিলিজ আছে। ‘মায়া’ রিলিজ করল। অর্ণব মিদ্যার ‘সেদিন কুয়াশা ছিল’ মুক্তি পাবে আর কিছু দিনেই। ওই ছবিতে জিতু কমল আছে আমার বিপরীতে। আমি খুব আশাবাদী। আর একটা ছবির ডাবিংয়ের কাজ শেষ করেছি কিছুদিন আগেই। রিলিজের ডেট এখনও ঠিক হয়নি।
এত সাফল্যে খুশি? আয়নার সামনে দাঁড়ালে কী মনে হয়?
সায়ন্তনী: মনে হয় আরও আগে সিরিয়াস হলে আরও একটু ভাল হত। টেলিভিশন করার সময় থেকেই ছবির চেষ্টা করতে পারতাম। আমি তো থিয়েটারের মানুষ। বিশ্বনাথ বন্দোপাধ্যায়ের গ্রুপে থিয়েটার করতাম। ছোটবেলায় রাহুলের সঙ্গে অভিনয় করেছি। আসলে আমার পরিবারে অভিনয় নিয়ে বিশেষ মাতামাতি ছিল না। আমার ভাইবোনেরা ডাক্তার, ইঞ্জিনিয়ার, কেউ রিসার্চ করছে।
পরিবারের অমতে অভিনয়, স্ট্রাগল কতটা ছিল?
সায়ন্তনী: অনেকটাই। আমার মা খুব ডমিনেটিং। ডান্স নিয়ে পড়ার ইচ্ছে ছিল, হয়নি। পড়তে পড়তে যতটা করতে পেরেছি। টিউশনের পয়সা জমিয়ে প্রথম নিজের পোর্টফোলিও করি। নাচ, থিয়েটার, কর্পোরেটের চাকরিও করেছি অ্যাক্সিডেন্টের পরে। সবশেষে মনে হয়েছে অভিনয়টাই করব।
সায়ন্তনী তাহলে জেদি?
সায়ন্তনী: অনেকটাই জেদি। ধারাবাহিকের টাকা জমিয়ে প্রথম গাড়ি কিনেছি। এখনও সবটাই নিজের জেদেই চালিয়ে যাচ্ছি।
মনের মানুষ কী বলছেন সাফল্যে?
সায়ন্তনী: আমি সিঙ্গল। আমি খুব ভয় পায় নতুন করে সম্পর্কে জড়াতে। সেলিব্রিটিদের সঙ্গে ডেট করতে চায় অনেকেই কিন্তু তাঁদের জীবনসঙ্গী করার মত ‘প্রগ্রেসিভ’ ভাবনা সকলের থাকে না। আমি আমার বাড়ির অমতে এই প্রফেশনে এসেছি। কারওর জন্যেই আমি অভিনয় ছেড়ে দিতে পারব না। বাবা যদি আমার প্রথম ভালবাস হয়, তাহলে অভিনয় আমার দ্বিতীয় ভালবাসা। নতুন করে আর অশান্তি ভাল লাগে না। এখন একটু বেশিই ম্যাচিওর আমি। ‘হুক আপ’ কালচারে আমি এখনও সেই ওল্ড স্কুল। সত্যি বলতে শাহরুখ আমাকে নষ্ট করেছে (হেসে ফেলে)। ‘কুছ কুছ হোতা হ্যায়’ সত্যি কী আর হয়!