সুবর্ণবাঙলা প্রতিবেদক
গ্রেপ্তার অপহরণ চক্রের এক সদস্য
অপহরণকারীরা প্রথমে চার বছরের সালমানকে ট্রেনে করে ঢাকা থেকে চট্টগ্রাম নিয়ে যায়। এর পর বিভিন্ন ট্রেনে ঘুরে ঘুরে অপহৃত পরিবারের কাছে মুক্তিপণ দাবি করে। অপহৃতের বাবা মাওলানা ইমদাদুল্লাহ পবিত্র হজ পালনে সৌদি আরবে থাকায় তারা এ সুযোগ কাজে লাগায়। ১৫ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করে অপহরণকারীরা। আসামিদের গ্রেপ্তারের পর জিজ্ঞাসাবাদে এসব তথ্য জানতে পেরেছে র্যাব।
সোমবার রাতে চট্টগ্রামের নিউ মার্কেট এলাকায় মুক্তিপণের টাকা নিতে এলে কৌশলে তাদের গ্রেপ্তার করে র্যাব-৭ ও ১০। পরে তাদের তথ্যের ভিত্তিতে সদরঘাট আইস ফ্যাক্টরি রোড এলাকা থেকে শিশুটিকে উদ্ধার করা হয়। গ্রেপ্তাররা হলেন– শাফায়েত হোসেন আবির ও আল আমিন। এতে জড়িত হেলাল ও আইয়ুবকে খুঁজছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।
এ বিষয়ে মঙ্গলবার কারওয়ান বাজারে র্যাবের মিডিয়া সেন্টারে সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে র্যাব। এতে সংস্থাটির আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন বলেন, তিন মাস আগে সালমানকে অপহরণের পরিকল্পনা করে গ্রেপ্তাররা। শিশুটির বাবা হজ পালনের জন্য সৌদিতে ছিলেন। এ সময়টাকে বেছে নেয় অপহরণকারীরা। পরিকল্পনা অনুযায়ী, আল আমিন বিভিন্ন সময়ে চিপস, চকলেট, খেলনা কিনে দিয়ে শিশু সালমানের সঙ্গে সখ্যতা গড়ে তোলে। তিনি জানান, গত ১৫ জুলাই কামরাঙ্গীরচরের মমিনবাগ এলাকা থেকে ট্রেন দেখানোর কথা বলে সালমানকে চট্টগ্রাম নিয়ে যায় অপহরণকারীরা। পর দিন অজ্ঞাত পরিচয় এক ব্যক্তি ভুক্তভোগী শিশুটির পরিবারকে ফোনে মুক্তিপণ দাবি করে। পরে সালমানের পরিবার স্থানীয় থানা পুলিশ ও র্যাব-১০কে বিষয়টি জানায়।
কমান্ডার আল মঈন বলেন, শিশুটিকে বাসার সামনে থেকে আল আমিন অপহরণ করে ঢাকার কামরাঙ্গীরচরের মাদবর বাজার এলাকায় তার অপর এক সহযোগী হেলালের কাছে নিয়ে যায়। হেলাল তাকে চট্টগ্রামে নেয় এবং শাফায়েত ও আল আমিনকে সেখানে যেতে বলে। চট্টগ্রামে হেলালের পরিচিত আইয়ুবের বাসায় সালমানকে রাখা হয়। পরে অপহরণকারীরা ট্রেনের বিভিন্ন স্থানে ঘুরে মোবাইল ফোনের মাধ্যমে ভুক্তভোগী শিশুর পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ করে ১৫ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করে। শিশুটির পরিবার মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে অপহরণকারীদের পাঁচ হাজার টাকাও দেয়। একপর্যায়ে অপহরণকারীরা পাঁচ লাখ টাকার বিনিময়ে সালমানকে ফেরত দিতে রাজি হয়। মুক্তিপণের টাকা নিয়ে চট্টগ্রামের নিউ মার্কেট এলাকায় যেতে বলে তারা। ভুক্তভোগীর পরিবারটি তাদেরকে আশ্বস্ত করে, তারা মুক্তিপণের টাকা নিয়ে চট্টগ্রামে যাচ্ছে এবং শিশুটির যাতে কোনো ক্ষতি না হয়।
ট্রেনে ঘুরে ঘুরে কেন অপহরণ ফাঁদ পাতা হয়েছিল– এমন প্রশ্নে কমান্ডার খন্দকার আল মঈন বলেন, এক জায়গায় বসে মুক্তিপণ চাইলে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী তাদের সহজে শনাক্ত করে ফেলতে পারে। এজন্য তারা একেক সময় একেক ট্রেনে ঘুরে ঘুরে অপহরণের টাকা দাবি করছিল। তারা অভিনব পন্থা অবলম্বন করছিল, তবে র্যাব তাদের গ্রেপ্তার করেছে।