অধ্যাপক ড. এস তাহের হত্যা: ফাঁসিতে ঝুলল মহিউদ্দিন ও জাহাঙ্গীর

আইন আদালত জাতীয়

সুবর্ণবাঙলা নিজস্ব প্রতিবেদক

ছবি: ফাঁসিতে মৃত্যু দণ্ড কার্যকর হওয়া মিয়া মোহাম্মদ মহিউদ্দিন ও জাহাঙ্গীর আলম

ফাঁসিতে ঝুলিয়ে মৃত্যুদণ্ড দেয়া হলো মিয়া মোহাম্মদ মহিউদ্দিন ও জাহাঙ্গীর আলমকে। বৃহস্পতিবার রাত ১০টা ১ মিনিটে রাজশাহীর কেন্দ্রীয় কারাগারে তাদের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয়েছে।

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূ-তত্ত্ব ও খনিবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক ড. এস তাহের আহমেদ হত্যা মামলায় দুই আসামি মহিউদ্দিন ও জাহাঙ্গীরের ফাঁসির প্রস্তুতি চলছিল কয়েকদিন ধরেই। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যার পরপরই রাজশাহী কেন্দ্রীয় কারাগারে ফাঁসি কার্যকরের বিষয়টি চূড়ান্ত হয়ে যায়।

হত্যাকাণ্ডের ১৭ বছর পর সর্বোচ্চ সাজা কার্যকর হলো। ফাঁসির দড়িতে ঝোলা সহযোগী অধ্যাপক ড. মিয়া মোহাম্মদ মহিউদ্দিন ছিলেন অধ্যাপক তাহেরের সহকর্মী। আর জাহাঙ্গীর আলম ছিলেন তাহেরের বাড়ির কেয়ারটেকার।

দুই আসামির ফাঁসির পর অধ্যাপক তাহেরের মেয়ে আইনজীবী সেগুফতা তাবাসসুম আহমেদ তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় সন্তোষ প্রকাশ করেছেন।

২০০৬ সালের পহেলা ফেব্রুয়ারি রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের কোয়ার্টারের ম্যানহোল থেকে উদ্ধার করা হয় অধ্যাপক তাহেরের মরদেহ। পরে তার ছেলে বাদী হয়ে মতিহার থানায় অজ্ঞাতদের বিরুদ্ধে মামলা করেন।

পুলিশ তদন্তে জানতে পারে, পদোন্নতি সংক্রান্ত বিষয়ের জের ধরে নৃশংস হত্যার শিকার হন অধ্যাপক তাহের। ২০০৭ সালের ১৭ মার্চ ছয়জনকে অভিযুক্ত করে আদালতে অভিযোগপত্র জমা দেয় পুলিশ।

বিচার শেষে ২০০৮ সালের ২২ মে রাজশাহীর দ্রুত বিচার আদালত চার জনকে ফাঁসির আদেশ ও দুজনকে খালাস দেয়।

  ছবি: অধ্যাপক ড. এস তাহের আহমেদ

মঙ্গলবার সকালে অধ্যাপক তাহের হত্যা মামলায় মৃত্যুদণ্ড পাওয়া আসামি জাহাঙ্গীর আলমের ফাঁসি স্থগিতের আবেদন খারিজ করে দেয় আপিল বিভাগ। ওইদিন দুপুরে কারা কর্তৃপক্ষের ডাকে দুই আসামির পরিবারের ৩৫ জন সদস্য তাদের সাথে শেষ দেখা করতে যান।

এরপর শুরু হয় ফাঁসির আনুষ্ঠানিকতা। জল্লাদসহ ফাঁসি বাস্তবায়ন প্রক্রিয়ায় জড়িতদের নিয়ে কয়েকদিন ধরেই রাজশাহী কেন্দ্রীয় কারাগারে চলছিল ফাঁসির মহড়া। বৃহস্পতিবার রাতেই দুইজনকে ফাঁসি দেয়া হবে বলে এদিন সন্ধ্যায় নিশ্চিত করেন রাজশাহী কেন্দ্রীয় কারাগার কর্তৃপক্ষ।

রাতে জাহাঙ্গীরের বড় ভাই সোহরাব হোসেন কারাগারে ঢোকেন। ভাইয়ের লাশ গ্রহণ করার জন্য তাকে ডাকা হয়। ডাক পান মহিউদ্দিনের পরিবারের সদস্যও।

রাত ১০ টা ১ মিনিটে রাজশাহী কেন্দ্রীয় কারাগারে একসঙ্গে দুজনের ফাঁসি কার্যকর করা হয়। এর আগে তাদের কালিমা পাঠ ও তওবা পড়ান কারা মসজিদের ইমাম মাওলানা মুজাহিদুল ইসলাম। দুজনকে একই মঞ্চে একসঙ্গে দুই আসামির ফাঁসি কার্যকর করা হয়।

আসামিদের ফাঁসিতে ঝোলানোর সময় উপস্থিত ছিলেন- রাজশাহী জেলা প্রশাসক শামীম আহমেদ, জেলা সিভিল সার্জন ডা. আবু সাঈদ মোহাম্মদ ফারুক, রাজশাহী কেন্দ্রীয় কারাগারের সিনিয়র জেল সুপার আব্দুল জলিল, জেলার নিজামুদ্দিন প্রমূখ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *