মণিপুরে বিজেপি সরকার থেকে সমর্থন তুলে নিল কুকিরা

আন্তর্জাতিক

নারী বিচারপতিদের নিয়ে কমিটি সুপ্রিম কের্টের
অনলাইন ডেস্ক

মণিপুরে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সহিংসতা মোকাবিলা (ফাইল ফটো)

বিজেপির নেতৃত্বাধীন ন্যাশনাল ডেমোক্রেটিক অ্যালায়েন্স (এনডিএ) থেকে মণিপুরে সমর্থন প্রত্যাহার করে নিয়েছে কুকি পিপলস অ্যালায়েন্স (কেপিএ)। ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় এই রাজ্যে হিন্দুপ্রধান মেইতেই জনগোষ্ঠীর সঙ্গে কুকিদের অব্যাহত সহিংসতার পরিপ্রেক্ষিতে বিজেপিদলীয় বীরেন সিং সরকার থেকে তারা সমর্থন প্রত্যাহার করেছে। গত তিন মাসের সহিংসতায় এ পর্যন্ত অন্তত ২০০ লোক নিহত হয়েছেন।

কেপিএর প্রধান তংমাং হাউকিপ মণিপুর রাজ্যের গভর্নরকে লেখা এক চিঠিতে বলেন, বর্তমান সহিংসতা পরিস্থিতি সতর্কভাবে বিবেচনা করে আমরা মুখ্যমন্ত্রী বীরেন সিংয়ের নেতৃত্বাধীন বর্তমান মণিপুর সরকারের ওপর থেকে সমর্থন প্রত্যাহার করছি।

এর আগে কুকি নেতারা ঘোষণা দিয়েছেন, জাতিগত দাঙ্গার কারণে ২১ আগস্ট থেকে শুরু হওয়া মণিপুর রাজ্যের অধিবেশনে তাদের এবং সমমনা বিধায়কদের যোগদানের সম্ভাবনা কম।

চূড়াচাঁদপুরের বিজেপিদলীয় বিধায়ক এল এম খাউত বলেছেন, বিরাজমান আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির কারণে আসন্ন অধিবেশনে আমার পক্ষে যোগদান সম্ভব হবে না। জাতিগত দাঙ্গায় সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে চূড়াচাঁদপুর জেলা।

সহিংস পরিস্থিতি এবং কুকিদের আলাদা প্রশাসনের দাবির প্রস্তাব বাস্তবায়নের অভাবের কারণে জাতিগত কুকি-জোমি-হামর বিধায়করা আগামী অধিবেশনে নাও যোগদান করতে পারেন বলেন তিনি। ৬০ সদস্যের মণিপুর বিধানসভায় জোটের সমর্থনসহ বিজেপির ৩৭, কুকি-জোমি জোটের ১০ ও কংগ্রেসের ৫ বিধায়ক রয়েছেন।

সুপ্রিম কের্টের কমিটি গঠন: এদিকে মণিপুরে শান্তি ফেরানোর আগে সেখানে বিশ্বাস গড়ে তুলতে হবে বলে মনে করে সুপ্রিম কোর্ট। একই সঙ্গে জাতিগত হিংসার ক্ষেত্রে পুনর্বাসন এবং অন্যান্য বিষয় দেখার জন্য সোমবার একটি কমিটি তৈরি করেছে সুপ্রিম কোর্ট। কমিটিতে তিনজন সাবেক বিচারপতিকে নিয়োগ দিয়েছেন দেশেটির সর্বোচ্চ আদালত। ওই কমিটির কাজের পরিধি আরও বাড়ানো হবে বলেও জানিয়েছেন সুপ্রিম কোর্ট।

কমিটির প্রধান করা হয়েছে জম্মু-কাশ্মীরের প্রধান বিচারপতি গীতা মিত্তালকে। ওই কমিটিতে থাকবেন বিচারপতি শালিনী ফাসাকারলার যোশী এবং আশা মেনন।

একই সঙ্গে সেখানে বিভিন্ন ঘটনা তদন্ত করার জন্য বিভিন্ন রাজ্যে কর্মরত অন্তত পাঁচজন ডেপুটি সুপার বা পুলিশ সুপার পদমর্যাদার আধিকারিককে নিয়োগ করার নির্দেশ দিয়েছেন সুপ্রিম কোর্ট। সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচুড়ের ডিভিশন বেঞ্চ এই নির্দেশ দেয়। আদালত জানিয়েছেন, মণিপুরে যে ঘটনাগুলো ঘটেছে, সেগুলোর ঠিকমতো তদন্ত করার জন্য এই আধিকারিকদের নিয়োগ করতে হবে।

টানা দু’দিনের হিংসাত্মক ঘটনার পর রোববার সন্ধ্যা থেকে কিছুটা শান্ত হয়েছে মণিপুরের ইম্ফল পশ্চিম জেলা। এই জেলার আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি খতিয়ে দেখে সোমবার সাত ঘণ্টার জন্য কারফিউ শিথিল করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে স্থানীয় প্রশাসন। খবর- এনডিটিভি ও টাইমস অব ইন্ডিয়া।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *