বসবাসের উপযোগী ছিল না ভবনটি
সুবর্ণবাঙলা ডেস্ক
দক্ষিণ আফ্রিকার জোহানেসবার্গ শহরে একটি ভবনে বুধবার রাতে আগুন লেগে অন্তত ৭৩ জন মারা গেছে এবং আহত হয়েছে আরো অনেকে। মৃতদের মধ্যে কয়েক জন শিশুও রয়েছে। মৃতের সংখ্যা আরো বাড়তে পারে। দমকলকর্মীরা ভবনটিতে ব্যাপক উদ্ধার তত্পরতা চালান। পাঁচতলা ঐ ভবন শহরের একটি বাণিজ্যিক এলাকায় অবস্থিত। তবে সেখানে অবৈধ ব্যবস্থাপনায় লোকজন বসবাস করত। অর্থাৎ, বসবাসের জন্য ভবনটি উপযোগী না থাকলেও লোকজন নিজেদের মতো করেই সেখানে বসবাস করত। সবশেষ তথ্য অনুযায়ী ভবনটিতে যারা বসবাস করত, তাদের মধ্যে বেশির ভাগই ছিল অভিবাসী লোক।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, ভবনটিতে দুই শতাধিক মানুষের বসবাস ছিল। যদিও সেটি বসবাসের উপযোগী ছিল না। ভবনটি শহরের যে এলাকায়, সেই জায়গা ‘হাইজ্যাকড’ বিল্ডিংয়ের এলাকা হিসেবে পরিচিত। যেসব ভবনে অবৈধ অভিবাসীরা বসবাস করে, সেই সব ভবনকে বোঝানোর জন্য স্থানীয়ভাবে ‘হাইজ্যাকড বিল্ডিং’ কথা ব্যবহার করা হয়। একজন দমকলকর্মী বলেছেন, অনেকেই ভবনটির ভেতরে আটকা পড়ে আছে এবং ভবনটির ভেতরে এমন করে কিছু অস্থায়ী কাঠামো তৈরি করা হয়েছে, যাতে সহজেই আগুন লাগতে পারে। ভবনটিতে যারা থাকত তাদের অনেকের স্বজনেরা বাইরে ভিড় করছে। ভবনটিতে অতিরিক্ত মানুষ বাস করত বলে অন্যরা যে তথ্য দিয়েছে, সে প্রসঙ্গে এক নারী জানান, ‘অবস্থা খুবই বাজে ছিল। বসবাসের উপযোগী জায়গা ছিল না এটা। সেজন্য আমি আমার মেয়েকে বাড়ি ফিরিয়ে নিতে চেষ্টা করেছিলাম।’
কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, যেহেতু আনুষ্ঠানিকভাবে কেউ ভবনটি ভাড়া বা বরাদ্দ নেয়নি, সেহেতু এর কোনো রক্ষণাবেক্ষণও হতো না। শহর কর্তৃপক্ষের কর্মকর্তারা ঘটনাস্থলের পাশেই এক সংবাদ সম্মেলনে বলেছেন, ভবনটির মালিকানা তাদেরই। তারা বলেন, শহরের অপরাধী চক্রগুলো গরিব ও ঝুঁকিতে থাকা মানুষকে নিজেদের দলে নেওয়ার চেষ্টা করে। তারাই এসব ভবন নিয়ন্ত্রণে রেখে বিপজ্জনকভাবে এসব লোককে জড়ো করে। দেশটির ইমারজেন্সি সার্ভিসের মুখপাত্র রবার্ট মুলাউদজি বিবিসিকে জানিয়েছেন, স্থানীয় সময় রাত দেড়টার দিকে ভবনটিতে অগ্নিকাণ্ডের সূচনা হয়। পরে দমকল বাহিনীর কর্মীরা এসে জোহানেসবার্গ সিটি সেন্টার এলাকার ঐ ভবন থেকে লোকজনকে সরিয়ে আনার চেষ্টা করে এবং মরদেহগুলো উদ্ধার শুরু করে। অনেককেই জীবিত উদ্ধার সম্ভব হয়েছে। সকাল সাড়ে ৯টার দিকে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন শহরের নির্বাহী মেয়র কাবেলো গোয়ামান্ডা।
এক্স-এ (সাবেক টুইটারে) ইমারজেন্সি সার্ভিসের মুখপাত্রের ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে, পুরো এলাকা পুলিশ ঘিরে রেখেছে এবং সেখানে দমকলবাহিনীর যানবাহন ও অ্যাম্বুলেন্স সারিবদ্ধভাবে রাখা আছে। রবার্ট মুলাউদজি স্থানীয় একটি টেলিভিশনে বলেছেন, পাঁচতলা ঐ ভবন আগেই পরিত্যক্ত ঘোষণা করা হয়েছিল, তার পরেও লোকজন সেখানে বসবাস করত। এখন দমকলকর্মীরা প্রতি ফ্লোরে তল্লাশি চালাচ্ছেন। —বিবিসি