সুবর্ণবাঙলা ডেস্ক
চীনের সঙ্গে বৈঠক শেষে জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদের বাকি স্থায়ী সদস্য দেশগুলোর সঙ্গেও বৈঠকের পরিকল্পনা রয়েছে আরব বিশ্বের এই প্রতিনিধি দলটির। গাজায় আত্মরক্ষার দাবিতে ইসরাইল যে সামরিক অভিযান চালাচ্ছে সেটি প্রত্যাখ্যান করানোর জন্য পশ্চিমা শাসকদের ওপর চাপ বাড়াতেই এ সফর শুরু করেছেন নেতারা।
বৈঠকে চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ওয়াং ই বলেছেন, ‘আসুন আমরা গাজার পরিস্থিতি দ্রুত শান্ত করতে এবং যত তাড়াতাড়ি সম্ভব মধ্যপ্রাচ্যে শান্তি পুনরুদ্ধার করতে একযোগে কাজ করি।’ আরও বলেছেন, ‘আমাদের অবিলম্বে যুদ্ধ এবং হত্যাকাণ্ড বন্ধ করতে হবে। শিগগিরই গাজায় মানবিক তহবিল সরবরাহ করতে হবে।’ ফিলিস্তিনের প্রতি দৃঢ় সমর্থন ব্যক্ত করে ওয়াং উল্লেখ করেছেন, বেইজিং আরব এবং মুসলিম দেশগুলোর একটি ভালো বন্ধু ও ভাই। গাজার পরিস্থিতি বিশ্বের সব দেশকে প্রভাবিত করছে বলে মনে করছেন তিনি। এজন্য আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে গাজায় উদ্ভূত মানবিক বিপর্যয় বন্ধ করতে এবং এই ট্র্যাজেডিকে ছড়িয়ে পড়া রোধ করতে জরুরি পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন। বলেছেন, আমরা সবসময় অটলভাবে আরব এবং মুসলিম দেশগুলোর বৈধ অধিকার এবং স্বার্থ রক্ষা করেছি। ফিলিস্তিনি জনগণের তাদের ন্যায্য অধিকার ও স্বার্থ পুনরুদ্ধারের প্রচেষ্টাকে সবসময় দৃঢ়ভাবে সমর্থন করেছি। চীন যত তাড়াতাড়ি সম্ভব গাজায় লড়াই বন্ধ করতে, মানবিক সংকট দূর করতে এবং ফিলিস্তিনি সমস্যার একটি প্রাথমিক, ব্যাপক, ন্যায়সঙ্গত এবং দীর্ঘস্থায়ী নিষ্পত্তির জন্য কাজ করবে বলেও জানিয়েছেন ওয়াং।
বেইজিং মধ্যপ্রাচ্য ও গ্লোবাল সাউথের দেশগুলোর সঙ্গে সম্পর্ক জোরদার করার পাশাপাশি অপশ্চিমা নেতৃত্বাধীন বহুপাক্ষিক গোষ্ঠীগুলোর সঙ্গেও সংযোগ গভীর করেছে। বৈঠকে সৌদি পররাষ্ট্রমন্ত্রী প্রিন্স ফয়সাল বিন ফারহান আল সৌদও যোগ দিয়েছিলেন। যুবরাজ ফয়সালও গাজা যুদ্ধের অবসান ঘটাতে আন্তর্জাতিক প্রচেষ্টাকে আহ্বান জানিয়েছেন।
চীনের মধ্যস্থতায় মধ্যপ্রাচ্যের বৈরী দুই দেশ সৌদি আরব ও ইরানের মধ্যে কূটনৈতিক সম্পর্ক পুনঃস্থাপিত হয়েছে। সেই সাফল্যের পর থেকেই মধ্যপ্রাচ্যে ‘শান্তির দূত’ স্বীকৃতি পায় চীন। রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা ধারণা করছেন, ইসরাইল-হামাস যুদ্ধেও একইভাবে শান্তি পুনরুদ্ধারের দায়িত্ব নিচ্ছে। এরই জের ধরে অনেকেই মনে করছেন, মধ্যপ্রাচ্যের ক্রমবর্ধমান সহিংসহায় যুক্তরাষ্ট্রের বদলে বিশ্ব দরবারে নিজের জায়গা করে নিচ্ছে চীন। গাজা যুদ্ধকে কেন্দ্র করে আবারও একটি দায়িত্বশীল পরাশক্তি হয়ে উঠতে চাইছে। বিশ্লেষক ইব্রাহিম ফ্রাইহাতের মতে, চীন যুক্তরাষ্ট্রের ক্ষমতার শূন্যতা পূরণ করে তার আন্তর্জাতিক ভূমিকাকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছে।