সুবর্ণবাঙলা প্রতিনিধি
তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, যেসব দেশ ভূ-রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত তারা কি করছে সেটা আমাদের বিবেচ্য বিষয় নয়, সেটি আমাদের জিজ্ঞাসাও নয়। নির্বাচন আমাদের দেশে হবে, আমাদের ভোটাররা নির্বাচনের সময় কাকে ভোট দিবে সেটি তারাই ঠিক করবে। সুতরাং তারা কি করছে সেটা নিয়ে আমাদের চিন্তাও নেই, মাথাব্যথাও নেই।
শনিবার দুপুরে চট্টগ্রাম নগরীর দেওয়ানজী পুকুর লেনের বাসভবনে ঈদ শুভেচ্ছা বিনিময় শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এ কথা বলেন তথ্যমন্ত্রী।
তথ্যমন্ত্রী আরও বলেন, বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর সাহেবরা যে বাংলাদেশের উন্নয়ন-অগ্রগতির বিরোধী; তার প্রমাণ অর্থনৈতিক জোট ব্রিকসে যোগদানের বিরোধিতা। বিএনপি ভিন্ন মাত্রার আন্দোলন শুরু করেছে এবং গত এক বছর তারা কোনো সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের সঙ্গে যুক্ত নয়- একটি টেলিভিশনে দেওয়া মির্জা ফখরুলের এমন বক্তব্যের জবাব দেন।
তথ্যমন্ত্রী বলেন, তার মানে হচ্ছে, আগে তারা সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। এটি তিনি স্বীকার করে নিয়েছেন তার বক্তব্যের মাধ্যমেই। অর্থনৈতিক জোট ব্রিকসে যোগদান ‘আমাদের জন্য শুভকর নয়’ মির্জা ফখরুল এমন সুবিধাবাদি বক্তব্য দিয়ে মূলত বাংলাদেশের উন্নয়ন-অগ্রগতির বিরোধিতা করেছেন।
ড. হাছান মাহমুদ আরও বলেন, ব্রিকস হচ্ছে পৃথিবীর উদীয়মান অর্থনীতির দেশগুলোর একটি জোট। ব্রাজিল, রাশিয়া, ভারত, চীন, সাউথ আফ্রিকা আছে এই জোটে। উদীয়মান অর্থনীতির দেশগুলো পৃথিবীর উদীয়মান অর্থনীতির শক্তি। সেই শক্তিকে সবাই সমীহ করে।
তিনি বলেন, বাংলাদেশ যোগ দেওয়ার ইচ্ছে প্রকাশ করেছে তা নয়, বাংলাদেশ যেহেতু উদীয়মান অর্থনীতির দেশ, এজন্য তারা বাংলাদেশকে ব্রিকসে যোগদানের আহ্বান জানিয়েছে। এটি বাংলাদেশের জন্য মর্যাদার ও সম্মানের। এর মাধ্যমে ব্রিকসও স্বীকার করে নিয়েছে শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ এখন উদীয়মান অর্থনীতির দেশ। সেখানে যোগ দিলে বাংলাদেশের বহুমাত্রিক সুবিধা হবে।
এ সময় শিক্ষা উপমন্ত্রী ব্যারিস্টার মুহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ বিষয়ক সম্পাদক আমিনুল ইসলাম, চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মাহতাব উদ্দিন চৌধুরী, সাধারণ সম্পাদক সাবেক মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীন, সাংগঠনিক সম্পাদক নোমান আল মাহমুদ এমপি, চট্টগ্রাম উত্তর জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি এমএ সালাম প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
আগামী নির্বাচন কোন পদ্ধতিতে হবে এবং নির্বাচন নিয়ে চীন, ভারত ও আমেরিকার সক্রিয়তা বিষয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তথ্যমন্ত্রী হাছান মাহমুদ বলেন, ভারত, অস্ট্রেলিয়া, ইংল্যান্ড, নিউজিল্যান্ড, জাপানসহ পৃথিবীর অন্যান্য সংসদীয় গণতন্ত্রের দেশে যেভাবে নির্বাচন হয় ঠিক সেভাবেই আমাদের দেশে নির্বাচন হবে সংবিধান অনুযায়ী।
তিনি বলেন, সেখানে যেভাবে চলতি সরকার দায়িত্ব পালন করে ঠিক একইভাবে আমাদের দেশেও বর্তমান সরকারের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নির্বাচনকালীন সরকারের প্রধান হিসাবে দায়িত্ব পালন করবেন। তখন সরকারের শুধু রুটিন কাজ থাকে। নির্বাচনের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট সব দপ্তর-অধিদপ্তর ও সংস্থাগুলোর বদলি থেকে শুরু করে সবকিছুই নির্বাচন কমিশনের হাতে ন্যস্ত থাকে।
এবার অত্যন্ত আনন্দঘন পরিবেশে ঈদুল আজহা উদযাপিত হয়েছে, ঈদযাত্রাও নির্ঝঞ্জাট ছিল উল্লেখ করে ড. হাছান মাহমুদ বলেন, গতবারের চেয়ে এবার প্রায় ১ লাখ বেশি গবাদিপশু কুরবানি দেওয়া হয়েছে।
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর সাহেবরা গত তিনদিন গলা ফাটিয়ে ফেলছেন দেশের মানুষ এবার কষ্টে আছে। দেশের মানুষ যদি কষ্টে থাকে তাহলে গতবারের চেয়ে ১ লাখ বেশি গবাদি পশু কুরবানি হলো কিভাবে, এ প্রশ্ন রাখেন তথ্যমন্ত্রী। বিএনপি দোতারাও নয়, এক তারার সুরে সব সময় বলে বেড়াচ্ছে দেশের মানুষ ভালো নেই। আসলে উনারা ভালো নেই, কিন্তু দেশের মানুষ ভালো আছে।