ডলার মেহেদী
বুদ্ধি প্রতিবন্ধী বা বিশেষ চাহিদা সম্পন্ন শিশুদের নিয়ে যখন পরিবার দিশেহারা, দেশ-বিদেশ ঘুরে ক্লান্ত; তখন তাদের আশার আলো দেখাচ্ছে স্টেম সেল থেরাপি নামে এক বিশেষ চিকিৎসা। চিকিৎসকদের দাবি, এই চিকিৎসায় ৬০ শতাংশ পর্যন্ত সমস্যার সমাধান হয়।
দেশে এই প্রথম পরীক্ষামূলকভাবে ৫৮ জন শিশুকে স্টেম সেল চিকিৎসা শুরু করেছে বাংলাদেশ শিশু হাসপাতাল। চিকিৎসকরা বলছেন, এই চিকিৎসায় সুস্থতার হার ৩০ শতাংশ। স্টেম সেল চিকিৎসায় বিশেষ চাহিদা সম্পন্ন শিশু, মেডিসিন বা সার্জারী চিকিৎসায় অনিরাময় যোগ্য রোগও সেরে উঠার প্রমাণ মিলেছে। তবে শিশুদের যতো তাড়াতাড়ি চিকিৎসা শুরু করা যায়, সুস্থতার হার ততো বেশি দাবি চিকিৎসদের।
শিশু হাসপাতালের সহযোগী অধ্যাপক ও স্টেম সেল বিশেষজ্ঞ ডা. শাকিল আহমদ বলেন, ২০২১ সাল থেকে ঢাকার শিশু হাসপাতালে পরীক্ষামূলকভাবে স্টেম সেল চিকিৎসা শুরু হয়। প্রাথমিকভাবে শিশুদের ওপর এটির প্রয়োগ শুরু হয়েছে। এখন পর্যন্ত ৫৮ জন শিশুর ওপর স্টেম সেল থেরাপি চলছে।
তিনি জানান, এই পদ্ধতির চিকিৎসায় প্রথম শিশুটির বোনমেরো কোষ সংগ্রহ করা হয়। পরে সেই কোষ বিভিন্ন পরীক্ষা-নিরীক্ষার মাধ্যমে শরীরে প্রয়োগের উপযোগী করে তোলা হয়। এভাবে ধাপে ধাপে চিকিৎসা চলে।
ডা. শাকিল জানান, এর কোনো পার্শ্ব প্রতিক্রিয়াসহ কোনো স্বাস্থ্যগত ঝুঁকি নেই। কেবল বুদ্ধি প্রতিবন্ধী বা বিশেষ চাহিদা সম্পন্ন শিশুই নয়, ওষুধ বা অপারেশনে নিরাময়যোগ্য নয় এমন যে কোনো রোগের ক্ষেত্রেই স্টেম সেল চিকিৎসার সুযোগ আছে।
তিনি জানান, শিশুদের ক্ষেত্র দুই বছর বয়স থেকে এই চিকিৎসা শুরু করা গেলে ভালো ফল পাওয়া যায়। সে ক্ষেত্রে রোগীদের ৬০ শতাংশ পর্যন্ত সমস্যার সমাধান হয়।
তিনি আরও জানান, শিশু হাসপাতালে গেলো দুই বছর ধরে যে ৫৮ জন শিশুর স্টেম সেল চিকিৎসা চলছে তাদের মধ্যে ৪০ জনেরই ৫০ থেকে ৬০ শতাংশ উন্নতি হয়েছে। তবে বাকী ১৮ জনের মধ্যে চিকিৎসাটির কোনো ফল মেলেনি।
একটি শিশুর বাবা একাত্তরকে বলেন, আট বছর বয়সের ছেলেটি জন্মের পর থেকেই বুদ্ধি প্রতিবন্ধী। দেশ-বিদেশের নানা চিকিৎসাতেও তার সমস্যার কোনো সমাধান মিলছিলো না। শেষ পর্যন্ত আশার আলো দেখিয়েছে স্টেম সেল থেরাপি। (সূত্র: ‘৭১ টিভি)