সুবর্ণবাংলা অনলাইন ডেস্ক
ফাইনালে আবারও বাংলাদেশের প্রতিপক্ষ ভারত
ফাইনালে আবারও বাংলাদেশের প্রতিপক্ষ ভারত। দিনের প্রথম ম্যাচে নেপালকে ৪-০ গোলে হারিয়ে ফাইনাল নিশ্চিত করে গতবারের রানার্সআপ ভারতীয় নারী দল। আর রাতের ম্যাচে শিরোপাধারী স্বাগতিক বাংলাদেশ একই ব্যবধানে উড়িয়ে দেয় ভুটানকে। উল্লেখ্য, এক ম্যাচ আগেই সাফ অনূর্ধ্ব-১৯ নারী চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনাল খেলা নিশ্চিত হয়ে গিয়েছিল বাংলার বাঘিনীদের।
সেজন্য মঙ্গলবারের ম্যাচটি তাদের জন্য ছিল আনুষ্ঠানিকতার। কিন্তু তাই বলে কাজে মোটেও ‘ঢিলেমি’ বা ‘ফাঁকি’ দেয়নি বাংলাদেশ অনূর্ধ্ব-১৯ নারী জাতীয় ফুটবল দল। কমলাপুরের বীরশ্রেষ্ঠ শহীদ সিপাহী মো. মোস্তফা কামাল স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত নিজেদের শেষ গ্রুপ ম্যাচে তারা প্রতিপক্ষ ভুটানকে হারায় সহজেই, ৪-০ গোলে। আগেই ফাইনালে উঠে যাওয়ায় এই ম্যাচে বাংলাদেশ কোচ সাইফুল বারী টিটু তার দলের প্রধান খেলোয়াড়দের বিশ্রাম দেন। প্রথম দুই ম্যাচের একাদশের ৯ জনই এই ম্যাচে ছিলেন না।
তাই জয়ী দলের জন্য এই স্কোরলাইন গ্রহণযোগ্য। আর ভুটান দল তো ম্যাচ শেষে এমন বাঁধভাঙা উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেছে যে স্পষ্টতই বোঝা যাচ্ছিল আরও বেশি গোল না হজম করার জন্য তারা আনন্দিত! ৩ ম্যাচের প্রতিটিতেই জিতে সর্বোচ্চ ৯ পয়েন্ট নিয়ে গ্রুপসেরা হলো বাংলাদেশ। পক্ষান্তরে ৩ ম্যাচেই হেরে শূন্য পয়েন্ট নিয়ে টুর্নামেন্ট থেকে শূন্য হাতে বিদায় নিল ভুটান। ১৮ মিনিটে গোল করে এগিয়ে যায় বাংলাদেশ।
ভুটানের বক্সের ভেতরে বিপজ্জনক আক্রমণ করে তারা। কিন্তু ভুটানের ৩-৪ ডিফেন্ডার বাধা হয়ে দাঁড়ান। জটলার মধ্যে বাংলাদেশের ঐশী, সুলতানা ও উমেহলা বল নিয়ে কাড়াকাড়ি করতে থাকেন। একপর্যায়ে বল চলে যায় ফরোয়ার্ড নুসরাত জাহান মিতুর পায়ে। বল পেয়ে ঠান্ডা মাথায় ডান পায়ের বুদ্ধিদীপ্ত শট নেন। ভুটান গোলরক্ষক দীক্ষা রাই ডানদিকে ঝাঁপিয়ে পড়েও বলের নাগাল পাননি। উল্লাসে ফেটে পড়ে বাংলাদেশ শিবির (১-০)। ৩০ মিনিটে ব্যবধান দ্বিগুণ করে বাংলাদেশ। কর্নার পায় তারা।
নুসরাত জাহান মিতুর উঁচু কর্নার বক্সে ভেতরে জটলার ভেতর লাফিয়ে উঠে হেড করেন ঐশী খাতুন। তার হেড ভুটান গোলরক্ষক দীক্ষার মাথার ওপর দিয়ে জালে প্রবেশ করে (২-০)।
৫৭ মিনিটে আবারও গোল করে লাল-সবুজ বাহিনী। এক সতীর্থের কাছ থেকে পাস পেয়ে বল নিয়ে ডান প্রান্ত দিয়ে ভুটানের ডিফেন্ডার নিমা সেলদনকে কাটিয়ে বক্সের ভেতরে ঢুকে পড়েন ঐশী। তার গড়ানো ক্রস থেকে বা পা লাগিয়ে ফিনিশ করেন তৃষ্ণা রানী (৩-০)। ৬৩ মিনিটে ভাগ্যপ্রসূত গোল পায় বাংলাদেশ। ভুটান গোলরক্ষক দীক্ষা গোল কিক করে বল দেন সতীর্থ ডিফেন্ডার শেন্ডু শেরিংকে। ততক্ষণে বল কেড়ে নিতে পেছনে থেকে দৌড়ে এগিয়ে আসেন ঐশী। শেন্ডু বলটি ব্যাকপাস দেন দীক্ষাকে।
কিন্তু বলের গতি ছিল কম। ঐশী বলের দখল নিতে শেন্ডুকে ততক্ষণে পেছনে ফেলেছেন। দীক্ষাও বিপদ বুঝে সামনে এগিয়ে এসে বলে পা চালানোর চেষ্টা করেন। কিন্তু তার আগেই ডান পায়ের গড়ানো শট নেন ঐশী। দীক্ষা ভারসাম্য হারিয়ে মাটিতে পড়ে যান। অসহায়ের মতো তাকিয়ে দেখেন বল ধীরে ধীরে চলে যাচ্ছে জালে (৪-০)!
বাংলাদেশ দল আরও কয়েকটি গোলের সুযোগ নষ্ট না করলে ব্যবধান আরও নিশ্চিতভাবেই বাড়ত। বাকি সময়ে আর কোনো গোল না হলে ভারতীয় রেফারি অঞ্জনা রাই খেলা শেষের বাাঁশি বাজালে গ্রুপসেরা হওয়ার চিত্তসুখ নিয়ে মাঠ ছাড়ে সাইফুল বারী টিটুর শিষ্যারা।